• আজ- শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:২২ পূর্বাহ্ন
Logo

যুবায়ের ও দোয়েল পাখির ছানা

গোলাপ মাহমুদ সৌরভ / ২১৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

add 1
  • গোলাপ মাহমুদ সৌরভ

যুবায়ের এতোটাই দুষ্টু যা অন্য ছেলেদের চেয়ে আলাদা বলা যায় কিন্তু মেধাবী। সারাদিন খেয়ে না খেয়ে পাখির ছানার পিছনে দৌড়ায়। খুব সহজেই গাছে চড়তে পারে।পাখির ছানা কুড়িয়ে এনে খাঁচার ভেতর বন্দী করে সেবা যত্ন করে লালন পালন করে খুবই আনন্দ বোধ করে যুবায়ের। একদিন খুঁজতে খুঁজতে একটি দোয়েল পাখির ছানার সন্ধান পেলো তারপর গাছে ওঠে গর্তের মুখে হাত দিয়ে দেখলো খুব সুন্দর একটি দোয়েল পাখির ছানা, যুবায়ের দেখে খুব খুশি হলো আর ছানাটাকে হাতে নিয়ে নিচে নেমে এলো। তারপর ছানাটাকে একটি লোহার খাঁচায় বন্দী করে রাখলো। তারপর ছানাটাকে ধান, চাউল, গম ইত্যাদি খেতে দিলো কিন্তু ছানা পাখিটি কোন রকম খেতে চাচ্ছে না কারণ মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত করে ছানাটাকে বন্দী করে রাখা হয়েছে, সকাল ঘনিয়ে বিকেল বেলা তখন যুবায়ের বুঝতে পেলো এভাবে না খেয়ে থাকলে ছানাটি মরে যেতে পারে তাই যুবায়ের ছানাটি কে খাঁচা থেকে বাহির করে জোর করে খাওয়ানো চেষ্টা করছে। ছানা পাখিটি চুপচাপ বসে আছে মাঝে মাঝে মায়াবী দৃষ্টিতে যুবায়েরের দিকে তাকিয়ে থাকে, কি যেন বলতে চায়। যুবায়ের দোয়েল পাখির ছানাটি কে হাতে নিয়ে আদর করে চুমু দিয়ে বললো আজ থেকে তুমি আমার ভালো বন্ধু আমি তোমাকে ভালোবাসি যদি তুমি না খাও আমি খুব কষ্ট পাবো। ছানা পাখিটি চুপচাপ আনমনা হয়ে বসে রইল। হঠাৎ যুবায়েরের মাথা বুদ্ধি এলো ছানা টির ঠোঁট দুটি ফাঁকা করে মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিতে হবে মনে হয় ছানা পাখিটি এখনো নিজে নিজে খেতে শিখেনি। এভাবেই ক’দিন খাওয়ানোর পর আস্তে আস্তে ছানাটি খেতে লাগলো এবং বড়ো হতে লাগলো এমনকি জুবায়েরের সাথে ভালো বন্ধু হতে শুরু করলো। একদিন যুবায়ের দোয়েল ছানা বলে ডাক দিলো ছানাটি ঘুরে থাকলো এবং জুবায়েরের কাছে আসলো তখনই যুবায়ের বুঝতে পারলো ছানাটি তার কথা শুনে এবং বুঝতে পারে ছানাটি পোষ মেনেছে। এভাবেই দিন যাচ্ছে আর দুজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব সৃষ্টি হচ্ছে এরইমধ্যে ছানাটি একটুআধটু ডানা মেলতে শুরু করেছে উড়াল দেওয়ার চেষ্টা করে। যুবায়ের যেখানে যায় ছানা পাখিটি কে কাঁধে চড়িয়ে ঘুরে বেড়ায় এমনকি স্কুলেও যা ছানা পাখিটি কে কাঁধে নিয়ে। একদিন স্কুলে গিয়ে জুবায়েরের কাঁধে বসে আছে দেখে শিক্ষক একটু রাগ করে বললেন, দেখো যুবায়ের এটা ক্লাস পাখি নিয়ে মশকরা করার জায়গায় নয় আর কোনোদিন যেন না নিয়ে আসো। শিক্ষকের এমন কথা শুনে ছানা পাখিটি উড়ে গিয়ে জানালার গ্রীলে বসে মাথা নিচু করে রেখেছে। যুবায়ের বুঝতে পেলো ছানাটি রাগ করেছে তাই যুবায়ের উঠে বললো, ছানাটি আমার খুব ভালো বন্ধু, আমি ওর সাথেই খেলাধুলা করি, ও আমার সব কথা শুনে তাছাড়া ক্লাসে আমার কোন বন্ধু নেই কারণ একজন মানুষ বন্ধুর চেয়ে পাখি বন্ধু অনেক ভালো তারা কখনো কাউকে দু:খ দেয় না বরং সবসময় পাশে থাকে। জুবায়েরের কথা শুনে স্যার অবাক হলো। কি বলছো যুবায়ের ক্লাসে এতো গুলো ছেলে থাকতে কেউ তোমার বন্ধু হতে পারেনা, স্যার বললো। জ্বি না,কারণ আমি ছানা পাখিটির চেয়ে কাউকে আপন মনে করিনা। দোয়েল ছানা এদিকে এসো স্যার বুঝতে পারেনি তুমি আমার একমাত্র ভালো বন্ধু, যুবায়ের বললো। জুবায়েরের কথা শুনে ছানা পাখিটি উড়ে এসে জুবায়েরের কাঁধে বসলো। স্যার দেখে বললো এ দেখি মানুষের কথাও বুঝতে পারে, খুব মজার বিষয় তো। জ্বি স্যার আপনি ডাক দিন দেখবেন আপনার কথা শুনতে পারবে। তাই নাকি, দোয়েল ছানা এদিকে এসো বলতেই ছানা পাখিটি উড়ে গিয়ে স্যারের কাধেঁ বসলো। স্যার ছানা পাখিটি কে আদর করে বললো সত্যিই খুব অদ্ভুত ব্যাপার পাখিও মানুষের পোষ মানে এটাই একটা বাস্তব প্রমাণ, সরি দোয়েল ছানা আমি না বুঝে মন্তব্য করেছিলাম। স্যার হেসে বললেন, আজ থেকে ছানা পাখিটি আমাদের বিদ্যালয়ের একজন ছাত্র এবং ক্লাসে আসার অনুমতি দেওয়া হলো, শুধু তাই নয় আজ থেকে আমরা সবাই এই দোয়েল পাখির ছানাটির ভালো বন্ধু, কি বলো তোমরা? জ্বি স্যার, ছাত্ররা বললো। ছানা পাখিটি খুশি হয়ে মাথা নাড়িয়ে কিচিরমিচির শব্দ করে সম্মতি দিলো, প্রকৃত বন্ধুত্ব পাখি ও মানুষের মাঝে গড়ে উঠুক এমনটাই প্রত্যাশা।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার (সকাল ১১:২২)
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪
  • ২০ মহর্‌রম, ১৪৪৬
  • ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ (বর্ষাকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT