• আজ- শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
Logo

বাংলাদেশ দীর্ঘস্থায়ী হোক

রেজা কারিম / ২১৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

add 1
  • রেজা কারিম

বাংলা ডিকশনারিতে (শব্দকোষে) চিরস্থায়ী ও দীর্ঘস্থায়ীকে সমার্থক হিসেবে দেখানো হয়েছে। চিরজীবী ও দীর্ঘজীবী শব্দদ্বয়কেও একই অর্থে দেখানো হয়েছে। চির শব্দের অর্থ নিত্য, সদা , অনন্ত। দীর্ঘ শব্দের অর্থ অধিক, লম্বা ,দূর প্রসারিত। তবে সাধারণত চির বলতে আমরা সমাপ্তিহীন কোন কিছু বুঝিয়ে থাকি। আর দীর্ঘ বলতে যে বিষয়টির শেষ অবশ্যই আছে কিন্তু তার ব্যাপ্তি অনেক তা বুঝিয়ে থাকি। কিন্তু এখানে আমি চিরস্থায়ী, দীর্ঘস্থায়ী, চিরদিন, দীর্ঘদিন, চিরকাল, দীর্ঘকাল, চিরজীবী ও দীর্ঘজীবীর মাঝে যে অর্থ আছে তার কোনো পার্থক্য তুলে ধরবো না। কারণ অবস্থা বুঝে ব্যব্স্থা নেয়ার ভিত্তিতে এবং বিশেষত কবিতায় ও গানে এদের সমার্থ আমার বোধগম্য হয়। আমার দৃষ্টিটা অন্যখানে। আর তা হলো আমরা কথায় কথায় বা মিটিং ও বক্তৃতায় বলে থাকি, “বাংলাদেশ চিরজীবী হোক”।

বাংলাদেশে কোন জীব নয়। সাধারণভাবে আমরা জীবের যে সংজ্ঞা দেই তার মধ্যে বাংলাদেশকে জীব বলে ঘোষণা করা মোটেও বুদ্ধিমানের পরিচায়ক হবে না। স্বাভাবিকভাবে আমরা জীব ও জড়’র যে সংজ্ঞা দেই তাতে বাংলাদেশ জীব বলে প্রমাণিত হয় না। পাশপাশি জড় পদার্থের সংজ্ঞায় পড়লেও একে জড় বলে আমি আখ্যায়িত করতে পারি না। জড় পদার্থের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকা ও “বাংলাদেশ’ শব্দটি স্ত্রী বাচক হওয়ার পরও এটি জড় নয়। এটি এর চেয়ে অধিক কিছু । কারণ এতে চেতনা ও অনুভূতি মিশ্রিত আবেগ আছে। তাই মোট কথা হলো আমরা ‘জীব’ (জীব থেকে জীবী) শব্দ প্রত্যাহার করে ‘স্থায়ী’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারি। এবং তা স্বাচ্ছ্যন্দেই করতে পারি। আমরা বলতে পারি “বাংলাদেশ দীর্ঘস্থায়ী হোক”। পাশাপাশি এ কথাটিও অকপটে বলতে চাই , চিরস্থায়ী কথাটিও এক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না। এককথায় বলতে গেলে বাংলাদেশের সাথে জীবী ও চির শব্দ দুটি ব্যবহার করা যাবে না। একমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহই চিরস্থায়ী ও চিরজীবী।

  • চিরস্থায়ী, দীর্ঘস্থায়ী, ক্ষণস্থায়ী:

স্থায়িত্বকে আমরা তিনটি ভাগে ভাগে করতে পারি। ১. চিরস্থায়ী ২. দীর্ঘস্থায়ী ৩. ক্ষণস্থায়ী। নশ্বর এ পৃথিবীতে মহান প্রভু আল্লাহ জাল্লা শানহুই একমাত্র চিরস্থায়ী। তাই তার অপর নাম চিরঞ্জীব (গুনবাচক নাম)। আর যা কিছু আছে তার কোনোটি দীর্ঘস্থায়ী , কোনটি ক্ষণস্থায়ী তাই বলে এ দুটোকে বছরের সীমানায় আবদ্ধ করাও সম্ভব নয়। স্থায়িত্বেও সবকিছুই অনির্ধারিত। দুটোর শেষ আছে একটির নেই। আমরা বলে থাকি “মানব জীবন ক্ষণস্থায়ী”। আর ইহকালে মানুষের স্থায়িত্বের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ষাট সত্তর বছর। অনেকে কম আবার কেউ কেউ আরও অনেক বেশি বছর বেঁচে থাকে। তাই বলে একশ বিশ, ত্রিশ বছর বেঁচে থাকলেই সেটাকে দীর্ঘস্থায়ী বলার কোনো কারণ নেই। মহাকালের তুলনায় এটাও নগন্য বা ক্ষণস্থায়ী অবশ্য এটি যে একটি দীর্ঘসময়ের জীবন (দীর্ঘজীবন) সে ব্যাপারেও কোন সন্দেহ নেই। কোন কোন গাছ শত শত বছর বেঁচে থাকে। একটি কচ্ছপ সাধারণত তিনশ সাড়ে তিনশ বছর বেঁচে থাকে। অবশ্য আগেকার যুগে মানুষের আয়ু ছিল শত শত বছরের। ক্রমান্বয়ে তা লোপ পেয়েছে। যেমন লোপ পেয়েছে মানুষের উচ্চতার। মহাবিশ্বের সবকিছুই যেহেতু মানুষের কল্যাণের জন্য তাই যুগের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রাণীকুলেরও বয়স ও উচ্চতার অথবা আকৃতির হ্রাস হয়েছে। অবশ্য প্রাণী ব্যতীত অন্যান্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে কিন্তু এমনটি ঘটে নি। যেমন: সূর্য , চন্দ্র। এদের পেট থেকে যুগে যুগে নতুন কোনো সূর্য , চন্দ্রের আবির্ভাব ঘটেনি। সেই একই সূর্য একই চন্দ্র শুরু থেকে এই অবধি আলো বিতরণ করে যাচ্ছে। এভাবেই আলো বিতরণ করবে কিয়ামত পর্যন্ত। কিয়ামতই হবে এ জন্মে এদের শেষ পরিণতি। আর মানুষের মৃত্যুই তার জন্য কিয়ামত। তদ্রুপ প্রত্যেকটি প্রাণীর বেলায়। অতএব উপরোক্ত আলোচনা থেকে দু’টি বিষয় পরিষ্কার যে, এক. সব প্রাণীই ক্ষণস্থায়ী। দুই. প্রাণী ব্যতীত অন্যসব দীর্ঘস্থায়ী।

পরিশেষে বলা যায় যে, স্থায়িত্বের মতো জীবী শব্দকেও তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি। চিরজীবী, দীর্ঘজীবী ও ক্ষণজীবী। ক্ষণস্থায়ী, দীর্ঘস্থায়ী, ক্ষণজীবী ও দীর্ঘজীবী শব্দগুলো বিভিন্নক্ষেত্রে স্থান কাল পাত্রভেদে ব্যবহারযোগ্য হলেও চিরস্থায়ী ও চিরজীবী শব্দদুটি একমাত্র সৃষ্টিকর্তার জন্যই প্রযোজ্য।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার (সকাল ৭:৪০)
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪
  • ২০ মহর্‌রম, ১৪৪৬
  • ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ (বর্ষাকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT