• আজ- শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৬ অপরাহ্ন
Logo

কোনো এক দূর্গা পূজায়

লেখক : / ১৮৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

add 1
  • হাসান শরাফত

শরতের আকাশে শুক্র মেঘের বেলা ভাসতে ভাসতে কি হয়ে নেমে আসে পৃথিবী তে অনেক ও শুভ দৌড়ে পূজা মন্ডপের প্যান্ডেলে প্রবেশ করে দুর্গা মূর্তি থেকে চুপ করে গিয়ে পড়ে সাক্ষাৎ দেবী দুর্গার নেয় মিষ্টি মেয়েটির উপর লজ্জায় মেয়েটি চোখ সরিয়ে নিলেও উনি কখনো দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দিকে ঘোর কাটে নিকের এই চল বৃষ্টি কমে গেছে থাক না আর একটু এখনো তো বৃষ্টি একেবারে বন্ধ হয়নি মেয়েটি তার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে সেখান থেকে চলে গেল অনেকের মনের আকাশে ক্ষনিকের বসন্তের হাওয়া যেন সবকিছু এলোমেলো করে দিল জীবনে আঘাত আসতে চেয়েছে কিন্তু কারো প্রতি এতটা সে কোনদিন অনুভব করবে মেয়েটির বাসা কোথায় একবার জিজ্ঞেস করলে হতো না তাহলে কিভাবে খুজবো মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে একটা পথ আছে তাহলে কোন না পূজা মন্ডপে তাকে পাওয়া যাবেই চল শুভ বৃষ্টি থেমে গেছে আর শহরের সবগুলো পূজা মন্ডপ ভূর্ব তাই নাকি চল তাহলে পরের মন্ডপে গিয়ে চারদিক ভালো করে তাকিয়ে দেখে কিন্তু কোথাও ওই মেয়েটিকে দেখতে পায় না অনেক তাই শুভকে তাড়া দেয় আরেকটি মূল্য বের হওয়ার জন্য এইতো শুধু ঢুকলাম একটু দেখ তারপর যাই অনেকের যেন তোর সয়না মনে হয় একটু দেরি করলেই যেন হারিয়ে যাবে তা স্বপ্ন রাজ্যের রাজকন্যা কিন্তু সত্যি সত্যি হারিয়ে ফেলে প্রতিটি মন্ডপে যাওয়ার পরও কোথাও খুঁজে পায় না তাকে খুব মন খারাপ করে বাড়ি ফিরে অনেক ক্লান্ত দেহটি বিছানায় এলিয়ে দিতে দুচোখ ভরে ঘুম চলে।

এই তুমি এমন করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলে কেন

কই না তো

সত্যি করে বল তুমি আমাকে পছন্দ করো

হ্যাঁ প্রথম দেখাতেই তোমাকে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে

তুমি এত মিষ্টি কেন আর তোমার হাসিও যেন আরো মিষ্টি সত্যি জাদু আছে

তোমাকে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে এত নম্র ভদ্র একজন মানুষকে আমি বহুদিন খুজেছি তুমি এত দেরি করে এলে কেন এতদিন কোথায় ছিলে

দেরি করে এসেছি বেশ করেছি হাত থেকে তোমাকে আর কোথাও যেতে দেব না

কিন্তু এখন তো আর সেই সুযোগ নেই

আমি অন্য কারো হয়ে গেছে

না না হতে পারে না

কি হয়েছে অনেক এমন করে চিৎকার করছো কেন পাশের রুম থেকে দৌড়ে আসে অনেকের মা

নামা কিছুই হয়নি বাজে স্বপ্ন দেখেছিলাম

ভয় করছে আমি থাকবো তোমার সাথে

না মা থাকতে হবে না তুমি চলে যাও আমি শুয়ে পড়েছি

সকালবেলা ঘুম না ভাঙতেই সবাই এসে হাজির এই চল মা তোকে যেতে বলেছে

আমার ভালো লাগছে না পরে যাব তুই এখন চলে যা

না তোকে না নিয়ে যাব না তাছাড়া আমাদের বাড়িতে আজ খুব মজা হবে আমরা ভাই বোন রা সবাই মিলে নাচবো তোর ভালো লাগবে ওই হুলহুল্লুর করবো তোর ভালো লাগবে

একপ্রকার জোড় করেই অনিককে নিয়ে যায় শুভর মা অনিককে দেখে খুব খুশি হয় তুমি এসেছ বাবা আমি খুব খুশি হয়েছি বাহিরে দাঁড়ানো শুয়োর চাচতো বোনকে ডেকে বলে আমি বলছিলাম না শুভ রাত বন্ধু ঢাকা মেডিকেলে পড়ে খুব ভালো ছেলে সে অনেক মেধাবী এখনই কোন সমস্যার কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে ওষুধের নাম মেসেজ করে পাঠিয়ে দেয় ঘর থেকে বের হয়ে রান্নাঘরে যায়

উনিকে ও শুভর জন্য খাবার নিয়ে আসতেন

কাকীর ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরে ঢুকেই চমকে যায় এইতো কাল রাতেই অনেক যেন আকাশ থেকে পড়ে কাল রাতে সমস্ত শহরে যাকে খুঁজেছি যাকে আর কোনদিন খুঁজে পাবো কিনা আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম সেই আফসুত্রের সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণের জন্য দুজনেই যেন বাঁক হারিয়ে ফেলে

তারপর অনেকেই প্রথম প্রশ্ন করে ভালো আছেন

আপনার নাম কি? আপনি ভালো আছেন

জি ভালো আমার নাম প্রিয়াঙ্কা

কোথায় পড়াশোনা করেন

ঢাকা ইউনিভার্সিটি এইবার ফার্স্ট ইয়ার

বলে থাকেন

জি

আপনি

আমিও

আপনাকে অনেক ভালো ছেলে অনেক মেধাবী

কে বলেছে

কাকি তো মাঝে মাঝে বলতো আজকেও বলল

ঘরে ঢুকেই চিল্লাচিল্লি শুরু করে শুভ এই মা তুমি এখনো অনেক খাবার দাওনি তোমাকে না বললাম তোকে না বললাম আমার এক বন্ধু আছে সারাদিন সে ঘরে বসে বসে পরে এই সেই ভবিষ্যতের নাম করা একজন ডাক্তার এই প্রথম আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসতে পেরেছি আর অনেক সময় কিন্তু খুব ভালো নাচতে পারে কতবার আরও দিতেছে সেই প্রথম হয়েছিল

প্রিয়াঙ্কা আজ আজও আজও নাচবে

অনিকের মুহূর্তেই যেন শরতের মেঘমুক্ত রাতের আকাশের মতো ঝলমলে তারার মত রঙ্গিন হয়ে উঠল সেই রঙিন পৃথিবীতে হারিয়ে যাওয়া রত্ন কেড়ে পেয়ে আনন্দে বাঁধ যেন ভেঙ্গে যেতে চাইল্ অনেকের কিভাবে যে সকাল গড়িয়ে দুপুর কিছুতেই টের পেল না বাড়ি ফেরার জন্য প্রিয়াঙ্কার দিকে তাকাতেই অনেক দিনের চেনা মানুষের নেয় বলে উঠলো রাতে আসবেন তো অনেক বলে উঠলো তো ডাক্তার অনেক বাবু

অনিক বাড়িতে ফিরে কিছুতেই মন স্থির করতে পারে না মন যেন কোন এক রঙ্গিন পাখির ডানায় ভর করে মরতেই প্রিয়াঙ্কা দেবীর কাছে ছুটে যেতে চায় তাই তো সন্তান আমার সাথে সাথে সুবোধের মন্দিরে পৌঁছে ছুটে যায় অদূরে দাঁড়িয়ে দেখতে পায় প্রিয়াঙ্কাকে সুখের ভাষায় সেখান থেকে সরে আসতে বলে প্রিয়াঙ্কাকে চোখের ভাষা পড়ে ফেলে কপির প্রস্তাব করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা রাজি হয়ে কাছের এক কপি সঁপে যায়।

কপির চুমুকে চুমুকে দুজনে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে মনের জমিনে যেন কবি হাসান শরাফতের সেই কবিতাটি ভেসে ওঠে

তোমার মধ্যে কোন মহিনি শক্তি আছে

যে শক্তি প্রতিনিয়ত যে শক্তি প্রতিনিয়ত

আমাকে টানছে তোমার দিকে

ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছি তোমার সঙ্গে

দাঁড়িয়ে গিয়েছি একই মোহনায় দেশের

ভেসে চলেছি একই নদীতে

আজ এক আমি যেন অস্তিত্বহীন

নিজের সত্তাকেই যেন হারিয়ে ফেলেছি

হঠাৎ সমসুরে দুজনেই বলে ওঠে কবে যাবে ঢাকায় দুজনে হুহু করে হেসে উঠে অনিক বলে আগামী শনিবার তুমি

আমিও শনিবারে চলে যাব ভাবছি

চল না একই সাথে আমরা ট্রেনে ঢাকায় যাই

মন্দ না কিন্তু টিকিট পাব কিভাবে

সে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না

চলো এখন এখান থেকে বের হই পরিচিত কেউ দেখে ফেললে মাইন্ড করতে পারে

রেলওয়ে স্টেশনে এক বিচিত্র জায়গা মুহুর্তেই জনসমুদ্র আবার ট্রেন চলে গেলে জনশূন্য অনিক টিকেট দুটি হাতে নিয়ে অধীর আগ্রহে প্রেম কার পোদ পানি দেয়া প্রিয়াঙ্কার পথ পানে চেয়ে আছে ট্রেন আসার আর মাত্র কয়েক মিনিট বাকি তবুও প্রিয়াংকা কে দেখা যাচ্ছে না নাকি আমাকে বোকা বানানোর জন্য টিকিট কাটতে বলেছে এমন ভাবতেই পেছন থেকে

কি ডাক্তার বাবু দেরি করে ফেলেছি বুঝি

না প্রিয়াংকা দেবী দেরি করেন নাই এবার ব্যাগ শক্ত করে ধরে প্রস্তুতি নেন ট্রেন এসে পড়েছেন দুজনে পাশাপাশি বসে ট্রেন ছেড়ে ফেলে দুজনেই দূরের দিগন্তের দিকে তাকিয়ে থাকে

আমি ভেবেছিলাম তুমি আসবেনা

তাই যদি না আসতাম

তাহলে ভেবে নিতাম তুমি দেশ দেশ সরি আপনি

কি আমি

এই বয়ালির আবার ডিম নিবেন গরম ডিম

আমার কাছে অল্প কিছু তাবিজ আছে মাত্র কয়েকজন ভাগ্যবান লোক নিতে পারবেন পরে লাখ টাকা দিলেও সম্ভব হবে না হ্যাঁ বলতে পারেন এই তাবিজ দিয়ে কি হয় কি হয় না দাদা এই তাবির সাথে রাখলে কেউ আপনাকে বশ করতে পারবে না এই তাবিজ দোয়া পানি আপনার মনের মানুষকে খাওয়ালে সারা জীবনের জন্য আপনার হয়ে যাবে।

এই পানি ঠান্ডা পানি লন

প্রিয়াঙ্কা

জি

এক বোতল পানি নিয়ে এই তাবিজ ভিজি আপনাকে খাইয়ে দেই

আপনি না ডাক্তার এগুলো বিশ্বাস করেন

আবারো দুজনে হুহু করে হেসে ওঠে

ঢাকা শহরে গিয়ে পড়াশোনার চাপে দুজনেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে তেমন দেখা সাক্ষাৎ হয় না এভাবে কয়েক মাস অতিবাহিত হয়

এদিকে ঈদের শুনে রেখে তার বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রিয়াঙ্কার বাবা ছেলে বিয়ে করে আমেরিকা চলে যাবে প্রিয়াঙ্কার পড়াশোনা শেষ হলে তাকেও নিয়ে যাবে

প্রিয়াঙ্কা এ কথা জানার পর যেন তার মাথায় অনিককে বলে তার বাবা অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র ঠিক ক রেছে।সে যেন তার বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় কারণ ডাক্তার ছেলেপেলে হয়তো ওই বিয়ে বাতিল করে রাজি হয়ে যাবে কি করবে অনেক কিছুতেই বুঝতে পারে না এটুকু জানে কোন মুসলিম ছেলে কোন হিন্দু মেয়ের বাবাকে প্রস্তাব দিলে কোনদিন মানবে না।

কি ভাবছো কথা বলোনা কেন

তুমি কি পাগল আমি মুসলিম হয়ে কি করে তোমার বাবাকে প্রস্তাব পাঠায়

কি বলছো তুমি এসব । তুমি মুসলিম?

হ্যাঁ আমি মুসলিম আমি এনামুল কোভিদ অনেক কেন শুভ তোমাকে বলেনি

আমি শুভদা কে এ ব্যাপারে কখনো জিজ্ঞেস করিনি আমি বিভিন্ন পূজা মন্ডপে আপনাকে দেখে ভেবেছিলাম আপনি হিন্দু প্রিয়াঙ্কার দুচোখে ঝর্ণার ধারার মতো অস্ত্র ঝরতে থাকে,

শুধু দুটি বছর আমার জন্য অপেক্ষা কর আমার পড়াশোনা শেষ হলেই দুজনে পালিয়ে বিয়ে করবো

এদিকে প্রিয়াঙ্কার বাবা প্রিয়াঙ্কার কোন কথাই শুনেনা জোর করে বিয়ে দিয়ে দেয় পড়াশোনা শেষ করে সেও আমেরিকা চলে যায়

দুর্গাপূজা শুরু হলেই ডাক্তার অনেক শুভদের বাড়ির সেই মন্দিরের গিয়ে ঘুরে আসুন কিন্তু কেন যায় তা সে নিজেও জানে না প্রিয়াংকা আমেরিকায়

প্রিয়াঙ্কার সাথে পরিচিত হওয়ার পর মাঝখানে আরো সাতটি দুর্গাপূজা অতিবাহিত হয়েছে।

আবারও শুরু হয়েছে দূর্গা পূজা

পূজা মন্ডপ গুলোকে নানান সাথে সজ্জিত করা হয়েছে মন্দির থেকে ঢাকের শব্দ ভেসে আসছে অনিকের শরীরটা আজ ভালো না বাইরে যেতে মন চাইছে না কিন্তু ঢাকের শব্দ যতই ভেসে আসছে ততই যেন অস্থিরতা বাড়ছে অবশেষে অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সেই মন্দিরের সামনে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে ডাক্তার অনিক তার বিশ্বাস কোন এক দুর্গাপূজাতেই আবার দেখা হবে প্রিয়াঙ্কার সাথে হঠাৎ দেখতে পায় প্রিয়াঙ্কাকে ক্ষনিকের ভিতরে যেন কালবৈশাখী ঝড় বইতে থাকে

কাছে আসতেই প্রিয়াঙ্কা তার ছোট মেয়েটিকে বলে তোমার অনেক বড় ডাক্তার আংকেল তাকে আদাব দাও।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার (বিকাল ৫:০৬)
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪
  • ২০ মহর্‌রম, ১৪৪৬
  • ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ (বর্ষাকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT