• আজ- শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন
Logo

আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা

লেখক : / ২৮০ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩

add 1

আত্মহত্যা মহাপাপ, প্রত্যেকটি ধর্মমতেই আত্মহত্যাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং আত্মহত্যাকারীর প্রতি মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য কঠোর হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাও মানুষ আত্মহত্যা করে। কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ তথাপি শিক্ষার্থীরা যখন আত্মহত্যা করে তখন তা ওই দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। অনেক আগে থেকেই দেশের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হতাশায় পড়ে আত্মহত্যা করে আসছে কিন্তু গেল কয়েক বছরে ভয়াবহভাবে এই আত্মহত্যার সংখ্যা কেবল বেড়েই চলছে। বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় আত্মহত্যার আগে শিক্ষার্থীরা প্রচণ্ড মানসিক কষ্টে থাকে। এসব মানসিক কষ্টগুলো হয়ে থাকে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া, পড়াশোনার চাপ, প্রেমঘটিত বিষয়, পরিবার থেকে কিছু চেয়ে না পাওয়া, পারিবারিক কলহ, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি ইত্যাদি কারণে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে আত্মহত্যা করেছেন ৪৪৬ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে স্কুল ও সমমানের পর্যায়ে ৩৮০ জন, কলেজ ও সমমানের পর্যায়ে ১০৬ জন এবং মাদ্রাসায় ৫৪ জন। এ ছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ শিক্ষার্থী গত বছর বেছে নিয়েছে আত্মহননের পথ। আট বিভাগে আত্মহত্যা করা স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে, যা মোট আত্মহত্যার প্রায় ২৩.৭৭ শতাংশ। আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। আত্মহত্যা করা স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৩.৯০ শতাংশই বাকি ৩৬.১ শতাংশ ছেলে। অন্য একটি প্রতিবেদনে দেখা যায় ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালে যে শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করেছে, তাদের মধ্যে ৭৬.১২ শতাংশই টিনএজার। তাদের মধ্যে ৬৫.৯৩ শতাংশ মেয়ে; ৩৪.০৭ শতাংশ ছেলে। আবার আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের ৮.০৮ শতাংশের বয়স ছিল ৭ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে ৪৬.৫২ শতাংশ মেয়ে। আর ছেলেদের সংখ্যা তার চেয়েও বেশি, ৫৩.৪৮ শতাংশ। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় জীবনে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটলে তারা সেটা সামলাতে পারেন না। প্রেমে বিচ্ছেদ হলে তারা যেমন ভেঙে পড়ে, তেমনি পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলও তাদের আশাহত করে, তখন পরিবারের সদস্যদের থেকে পর্যাপ্ত সাপোর্ট না পেলেই আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় তারা। এই অকালে দেশের মেধা যদি ঝড়ে পড়া থামানো না যায় তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তাই সরকারকে শিক্ষার্থীদের হতাশা, একাকিত্ব ও নেতিবাচক ভাবনা থেকে দূরে রাখতে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষক-কর্মচারীদের আচরণ ও পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণে কৌঁসুলি ও সহানুভূতিশীল হতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পেছনে পরিবারের দায়ও কোনো অংশে কম নয়। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে লজ্জা কিংবা ভয়ে আত্মহত্যা করে ফেলে অনেক শিশু। তাই বাবা মায়েদের সচেতন হতে হবে। সন্তান পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তাকে ভর্সনা না করে সান্ত্বনা দিতে হবে। সর্বশেষে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রচারণা, প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং আত্মকর্মসংস্থান তৈরি, কমিউনিটি ও পরিবারের সহায়তায় হতাশামুক্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি করতে এখনই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার (বিকাল ৩:৫৬)
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪
  • ২০ মহর্‌রম, ১৪৪৬
  • ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ (বর্ষাকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT