ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলায় আবারও রক্তপাত হলো—মাত্র একদিনে আরও ৫১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই নিহত ২৭ জন, আর অন্তত ২৪ জন মানুষ মারা গেছেন মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে। এমন পরিস্থিতি শুধু এক দিনের পরিসংখ্যান নয়, বরং গাজাবাসীর প্রতিদিনের বাস্তবতা।
ইসরাইলি বাহিনী জেইতুন ও সাবরা এলাকায় অব্যাহত হামলা চালাচ্ছে। এক মাসেরও কম সময়ে গাজা সিটির এক হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো আটকে আছে শত শত মানুষ। গোলাবর্ষণ ও সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় উদ্ধারকর্মীরা সাহায্য করতে পারছেন না। মানবিক সহায়তাও পৌঁছানো যাচ্ছে না।
প্রশ্ন জাগে—মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের কোন ধারার আলোকে এমন হত্যাযজ্ঞ বৈধতা পাচ্ছে? শিশু, নারী, সাধারণ মানুষ যখন আশ্রয় চাইতে গিয়ে জীবন হারাচ্ছেন, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা অপরাধীদেরই সাহসী করে তুলছে।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি কেবল একটি ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত নয়; এটি এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। খাদ্য, পানি, ওষুধের সংকটে যখন মানুষ মরিয়া হয়ে সহায়তার লাইনে দাঁড়ায়, তখনও যদি তাদের ওপর বোমা বর্ষণ হয়—তাহলে তা নিছক যুদ্ধ নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।
জাতিসংঘ, ওআইসি কিংবা আঞ্চলিক শক্তিগুলো বারবার উদ্বেগ জানিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। অবরুদ্ধ জনগণের ওপর এভাবে নিরবচ্ছিন্ন আক্রমণ চালানো থামাতে হলে কূটনৈতিক চাপের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি।
গাজায় শান্তি ফেরানো শুধু ফিলিস্তিনের মানুষের দায় নয়—এটি সমগ্র মানবজাতির দায়। আজ নীরব থাকলে ইতিহাস আমাদেরও ক্ষমা করবে না।