অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও চীনে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১১ মিনিটের দিকে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামে।
ইউএসজিএস আরও জানায়, রোববার মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশ—বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত, মিয়ানমার, ভুটান ও চীন কেঁপে উঠেছে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তি বেশি গভীরে না হওয়ায় ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াত কবীর বলেন, প্রাথমিকভাবে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে বলে আমাদের কাছে রেকর্ড আছে। এ ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ৩৮০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের আনুমানিক ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, উৎপত্তিস্থলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৯। উৎপত্তিস্থলটি আসামের রাজধানী গৌহাটি থেকে দূরে আসাম ভ্যালি ও হিমালয়ের মাঝামাঝি। এটি মাঝারি থেকে ভারী মাত্রার ভূমিকম্প। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হলেও ঝুঁকির দিক দিয়ে খুব ওপরে রয়েছে। যে পরিমাণ শক্তি ইন্ডিয়ান-বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে জমা হয়ে আছে, সেই শক্তিটা যদি বের হয়, তাহলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এটি আগামীকালও হতে পারে, আগামী ৫০ বছর পরও হতে পারে। কখন হবে, সেটি আমরা বলতে পারি না। তবে যেটি হবে, সেটি খুব ব্যাপক হবে। সাবডাকশন জোনের ভূমিকম্পগুলো ভয়ংকর হয়।
এর আগে গত ২২ আগস্ট মিয়ানমারের ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশেও অনুভূত হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্প উদ্বেগজনক হারে বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সাল থেকে রেকর্ড করা ৬০ ভূমিকম্পের মধ্যে তিনটি ৪ মাত্রার ওপরে এবং ৩১টি ৩ থেকে ৪ মাত্রার মধ্যে ছিল। নেপাল, ভারত, ভুটান, চীনেও যে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, তা দুর্যোগের আন্তঃদেশীয় মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, সম্প্রতি বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয়নি। মানে এই নয়, আর বড় ভূমিকম্প হবে না। তাই এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। ৭ মাত্রার কাছাকাছি ভূমিকম্প ১০০ থেকে দেড়শ বছর পরপর হতে পারে। সেই হিসাবে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশে যে কোনো সময় হওয়ার শঙ্কা আছে।