সাতক্ষীরা, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা, আজ নার্সারি ব্যবসার জন্য সম্ভাবনাময় একটি অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। এ বছর জেলার ১২১ একর জমিতে ১২৬টি ছোট-বড় নার্সারি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় রয়েছে ৪৩টি নার্সারি।
জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই ছড়িয়ে আছে এই নার্সারি, যেখানে বছরে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার গাছের চারা উৎপাদন হয়। স্থানীয় কৃষক ও উদ্যোক্তারা জানান, আম, কাঁঠাল, লিচু, নারিকেলসহ নানা ফলদ চারা ছাড়াও ফুল, ঔষধি, মসলা এবং বনজ বৃক্ষের চারা স্থানীয় বাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।
অনেক নার্সারি সারা বছরই উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উন্নত জাতের আমের চারা উৎপাদনে সাতক্ষীরার সুনাম রয়েছে। তৌহিদ হাইব্রিড নার্সারি, সদর ও ফয়জুল্লাহপুরে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে বিস্তৃত, বছরে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ আমের চারা উৎপাদন করে। এছাড়া হাসপাতাল সড়কের আল্লারদান নার্সারিতে ফল, ফুল, ঔষধি ও মসলার চারা পাওয়া যায়। অনলাইন মাধ্যমে নার্সারি ব্যবসা প্রসারিত করছে সাতক্ষীরা অনলাইন নার্সারি, যা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে নার্সারি ব্যবসায় এসেছে নতুন সম্ভাবনা। এখন ঘরে বসেই মানুষ অনলাইনে চারা অর্ডার করতে পারছে। সাতক্ষীরা জেলা নার্সারি মালিক সমিতি উদ্যোক্তাদের সংগঠিত করে আরও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে কাজ করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাতক্ষীরার উর্বর মাটি, নদী-খাল ও অনুকূল আবহাওয়া নার্সারি ব্যবসার জন্য অনন্য। সঠিক পরিকল্পনা, সরকারি সহযোগিতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ হলে এই জেলা ভবিষ্যতে দেশের অন্যতম বৃহৎ নার্সারি হাব হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
সাতক্ষীরা এখন কেবল কৃষিকাজের জেলা নয়; এটি একটি উদ্ভাবনী কৃষি উদ্যোগের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে, যেখানে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ একসাথে বিকশিত হচ্ছে।