অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধিতে উন্নতি দেখা যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, যা জুনে ছিল ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত ২২ বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এটি এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একবার প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছিল ৬ দশমিক ৮২ শতাংশে। তবে করোনাভাইরাসের সময়ও ঋণ প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশের নিচে নামেনি।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতির অস্থিরতা, ঋণচাহিদা হ্রাস এবং খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি টানা কমছে। গত বছরের জুলাইয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা থেকে ধাপে ধাপে কমে এসে বর্তমানে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমেছে।
এদিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকারও বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার পতনের পর বড় অঙ্কের ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই পলাতক হয়ে যাওয়ায় এবং ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংক খাতের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ড অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, জানুয়ারিতে তা কমে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ১৫ শতাংশে এবং ফেব্রুয়ারিতে আরও কমে হয় ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। মে মাসে সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে, তবে জুলাইয়ে এসে আবার নেমেছে সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ না ফিরলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান