• আজ- বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

চন্দ্রগ্রহণের সময় করণীয় সম্পর্কে ইসলামি নির্দেশনা

লেখক : / ৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

add 1

আগামী রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে দেখা যাবে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এদিন রাত ৯টা ২৮ মিনিট থেকে শুরু হয়ে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর পর্যন্ত গ্রহণটি স্থায়ী হবে প্রায় ৭ ঘণ্টা ২৭ মিনিট। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে বাংলাদেশ থেকেও এ বিরল দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা যাবে।

বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী যখন সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে চলে আসে এবং সূর্যের আলো পৃথিবীর কারণে চাঁদে পৌঁছাতে পারে না, তখনই চন্দ্রগ্রহণ ঘটে।

কোরআনের ভাষায় সূর্য-চন্দ্র মহান আল্লাহর অনন্য সৃষ্টি। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তিনি সূর্যকে মাধ্যম বানিয়েছেন আর চাঁদের মধ্যেও রেখেছেন মানুষের জন্য নানাবিধ কল্যাণ। চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই, সূর্য থেকে আলো গ্রহণ করেই পৃথিবীতে স্নিগ্ধ আলো ছড়ায়। আল্লাহ তায়ালা সুরা ইউনুসে ইরশাদ করেন— “তিনিই সূর্যকে করেছেন দীপ্তিময় আর চাঁদকে করেছেন স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত।” অন্যদিকে সুরা কিয়ামাহতে আল্লাহ বলেন— “যখন দৃষ্টি চমকে যাবে, চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে পড়বে, তখন সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে।”

নবী করিম (সা.) চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর ছেলে ইবরাহিম ইবনে মুহাম্মদের মৃত্যুর দিনে সূর্যগ্রহণ হলে সাহাবায়ে কেরাম মনে করেছিলেন, এটি হয়তো তাঁর মৃত্যুজনিত কারণে ঘটেছে। তখন রাসুল (সা.) তাদের সংশোধন করে বলেন, সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। কারো জন্ম বা মৃত্যুর কারণে সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ ঘটে না। তিনি আরও বলেন, যখন তোমরা গ্রহণ দেখবে, তখন আল্লাহর কাছে দোয়া করবে, তাঁর মহত্ত্ব ঘোষণা করবে, তাকবির বলবে, নামাজ আদায় করবে এবং সদকা প্রদান করবে।

হাদিসের আলোকে চন্দ্রগ্রহণের সময় বিশেষ নামাজ পড়ার নির্দেশনাও রয়েছে। এ নামাজকে ইসলামে বলা হয় ‘সালাতুল খুসুফ’। নবীজি (সা.) নিজেও এ নামাজ আদায় করেছেন। তবে সূর্যগ্রহণের নামাজ জামাতে আদায় করার বিধান থাকলেও চন্দ্রগ্রহণের নামাজ একাকী পড়া সুন্নাত। এজন্য চন্দ্রগ্রহণের সময় মসজিদে সমবেত হওয়ার প্রয়োজন নেই। যারা গ্রহণ প্রত্যক্ষ করবেন, তারা নিজ নিজ বাসায় অন্তত দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন। ইচ্ছা করলে চার রাকাত বা এর বেশি পড়াও যাবে। তবে প্রতি দুই বা চার রাকাত শেষে সালাম ফেরাতে হবে। এ নামাজের জন্য কোনো আজান বা একামতের প্রয়োজন নেই। নামাজ শেষে চন্দ্রগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর জিকির, দোয়া ও মোনাজাতে মশগুল থাকা উত্তম।

সারকথা হলো, চন্দ্রগ্রহণ কোনো অশুভ সংকেত নয়। বরং এটি মহান আল্লাহর এক নিদর্শন, যার মাধ্যমে তিনি বান্দাদের তাঁর ক্ষমতা ও মহিমা স্মরণ করিয়ে দেন। তাই এ সময় মুসলমানদের উচিত বেশি বেশি ইবাদত করা, দোয়া করা, আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা করা এবং গরিব-অসহায়দের মাঝে সদকা প্রদান করা।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ