আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০০ জনে। এখনো বহু মানুষ ধসে পড়া ভবন ও ঘরবাড়ির নিচে আটকে আছেন। দুর্গম এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তা চেয়েছে দেশটির তালেবান সরকার।
২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায় তালেবান শাসিত আফগানিস্তানের। নারীদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাসহ নানা কঠোর নীতির কারণে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মানবিক সহায়তাও প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশটি আরও বড় সংকটে পড়েছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার রাতেও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত ছিল। ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী কুনার প্রদেশে। ভূমিকম্পের উৎপত্তি ছিল মাটির মাত্র ৬ মাইল গভীরে, যা ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক ধ্বংস ডেকে এনেছে।
আফগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় এখনো উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারেননি। আফগান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সারাফাত জামান বলেন, “আমাদের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। কারণ অনেক মানুষ তাদের জীবন ও ঘরবাড়ি হারিয়েছে।”
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ইউসুফ হাম্মাদ জানিয়েছেন, আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ভূমিকম্পের প্রভাব দেশটির ওপর দীর্ঘমেয়াদে পড়বে। কুনার প্রদেশের তিনটি গ্রামে প্রায় সব বসতবাড়ি ভেঙে গেছে, শুধু এ প্রদেশেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০০ জন।
কুনারের নুরগাল জেলার ঘাজি আবাদ গ্রাম এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। এক বাসিন্দা আবদুল্লাহ বলেন, “গ্রামের কোনো বসতবাড়িই আর টিকে নেই। এমন দুর্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে, এখানে জীবন যেকোনো মুহূর্তে শেষ হয়ে যেতে পারে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আব্দুর রহমান