• আজ- সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন

হোয়াটসঅ্যাপ ফ্রি, তবুও বিলিয়ন ডলার আয়!

আব্দুর রহমান / ৩৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

add 1

বর্তমান সময়ের মানুষ প্রতিদিন অসংখ্য ডিজিটাল কথোপকথনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা হোয়াটসঅ্যাপে পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি, অফিসের কাজ করছি, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। প্রতিটি মেসেজের আড়ালে এক বিশাল প্রযুক্তি-ইকো সিস্টেম কাজ করছে—এবং এর অনেকটাই আমাদের অজানা।

আমরা সাধারণত ধরে নিই, যেহেতু হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপ বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়, তাই এর পেছনে কোনও খরচ নেই। বাস্তবে, এই সেবা দিতে প্রতি মুহূর্তে প্রচুর কম্পিউটিং শক্তি, সার্ভার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন হয়। এই খরচ কে বহন করছে?

উত্তরটা সহজ—আপনি নিজেই, তবে সরাসরি অর্থ দিয়ে নয়। আপনি যে ডেটা দিচ্ছেন, সেটিই হচ্ছে আপনার মুদ্রা। আপনি যখন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন, তখন আপনি একটি ব্যবসায়িক কাঠামোর অংশ হয়ে পড়েন। এই প্ল্যাটফর্মগুলো আপনাকে তাদের “গ্রাহক” হিসেবে নয়, বরং “পণ্য” হিসেবে দেখে।

হোয়াটসঅ্যাপ যদিও দাবি করে তারা এনক্রিপশন ও গোপনীয়তা বজায় রাখে, কিন্তু তা সত্ত্বেও নানা উপায়ে ব্যবহারকারীর আচরণ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞাপন ও ব্যবসায়িক লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টি করে তারা। প্রিমিয়াম মেসেজিং, বিজনেস চ্যাট, চ্যানেল সাবস্ক্রিপশন ইত্যাদির মাধ্যমে মেটা প্রতিবছর বিলিয়ন ডলার আয় করছে

এর বিপরীতে সিগন্যাল বা ইলিমেন্টের মতো কিছু অ্যাপ আছে, যারা অলাভজনক ভিত্তিতে বা গ্রাহকের নিয়ন্ত্রণাধীন সার্ভারে কাজ করে, কিন্তু সেগুলোর স্থায়িত্ব বা বিস্তার অনেক কম। সিগন্যাল অনুদানে চলে, ডিসকর্ড নির্দিষ্ট ফিচারের জন্য অর্থ নেয়, আর স্ন্যাপচ্যাট বিজ্ঞাপন ছাড়াও চশমা থেকে সুদ পর্যন্ত নানা পথ খুঁজে বের করেছে।

এই পরিস্থিতি আমাদের একটি গভীর প্রশ্নের সামনে দাঁড় করায়—আমরা কি ডিজিটাল স্বাধীনতা চাই, নাকি সুবিধার বিনিময়ে নিজের তথ্য বিলিয়ে দিতে রাজি?

এখনকার দুনিয়ায় তথ্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ। আপনি যদি কোনো কিছু বিনামূল্যে ব্যবহার করেন, তাহলে প্রায় নিশ্চিত ধরে নেওয়া যায়—আপনিই সেই পণ্য, যার উপর দিয়ে সেই অ্যাপ ব্যবসা করছে।

তাই আমাদের প্রয়োজন প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে নতুন করে ভাবা। শুধু সেবা গ্রহণ করলেই চলবে না, জানতে হবে—এর মূল্য কে দিচ্ছে এবং কিভাবে। সচেতন ব্যবহারকারী হওয়া এখন সময়ের দাবি।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ