• আজ- সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ন

সুন্দরবন ভ্রমণের প্রধান সড়ক বেহাল: সাতক্ষীরা-ভেটখালী মহাসড়ক সংস্কারে বিলম্বে চরম ভোগান্তি

মোঃ আব্দুল্লাহ / ৮৬ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

add 1

সুন্দরবনের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে প্রতিবছর হাজারো পর্যটক সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও ভেটখালী হয়ে কলবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জ এলাকায় পাড়ি জমায়। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ ভ্রমণপথ সাতক্ষীরা-ভেটখালী মহাসড়কের বেহাল অবস্থার কারণে বর্তমানে প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে ভ্রমণপিপাসু মানুষসহ স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাফিউজ্জামান জানান, সাতক্ষীরা লাবনী মোড় থেকে ভেটখালী পর্যন্ত ৬৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ২০২৩ সালে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়। ছয়টি প্যাকেজে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ছয়জন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে এখনো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে তুলনামূলক বিবরণী (CS) অনুমোদিত না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। দীর্ঘ ২৬ বছর কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম না থাকায় সড়কটির অবস্থা চরমভাবে অবনতি হয়েছে। পূর্বে এটি একটি জেলা মহাসড়ক হলেও বর্তমানে এটি আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীত হয়েছে।
বর্তমানে সড়কটির প্রস্থ ৫.৫ মিটার (১৮ ফুট) হলেও নতুন প্রকল্প অনুযায়ী লাবনী মোড় থেকে কালিগঞ্জ পর্যন্ত ১০.৩ মিটার (৩৩.৫ ফুট) এবং কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত ৭.৩ মিটার (২৪ ফুট) চওড়া হবে।

এই সড়ক দিয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার মানুষ নিয়মিত চলাচল করে। এছাড়া সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত কলবাড়ি, মুন্সিগঞ্জ, ও নীলডুমুর পর্যটন এলাকায় যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটিই।
এখানে গড়ে উঠেছে আকাশলীলা ইকোট্যুরিজম পার্ক, টাইগার পয়েন্ট, বরসা রিসোর্স সেন্টারসহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব পর্যটনকেন্দ্র, যা সরকারকে বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব এনে দেয়।

এছাড়া নীলডুমুরে রয়েছে বিজিবি হেডকোয়ার্টার, বন বিভাগের রেঞ্জ অফিস, নৌ থানা ও ট্যুরিস্ট পুলিশের ফাঁড়ি। কলবাড়ি থেকে নীলডুমুর পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কপথের দুই পাশে গড়ে উঠেছে কাঁকড়া ও বাগদা রেনু হ্যাচারিসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে সফটসেল কাঁকড়া সীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহনে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়।

সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সরাসরি বাস সংযোগ না থাকায় সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগরে পৌঁছাতে যাত্রীদের কালিগঞ্জে বাস পরিবর্তন করতে হয় এবং প্রায় ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত করলেও স্থানীয় বাস মালিক সমিতির লোকজন বারবার হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ করছে যাত্রীরা।

স্থানীয়রা জানান, এ সড়কে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না হলে পর্যটন, পরিবহন ও পণ্য রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে, যা সরকারের রাজস্ব আয়ে বড় ধাক্কা দেবে। তাই সাতক্ষীরা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরের সচেতন মহল দ্রুত সিএস অনুমোদন এবং প্রকল্পের কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ