সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে হেনস্তার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশের ভাষ্য, সাদা পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি সাবেক সিইসিকে জুতা দিয়ে মারতে দেখা গেছে। ওই ব্যক্তির নাম মুজাম্মেল হক ঢালী, যিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে যুক্ত। তবে মুজাম্মেল দাবি করেছেন, তিনি ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন না এবং এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিও এডিট করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। দলীয়ভাবেও এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপির একটি মামলায় সাবেক সিইসির নাম আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কথিত ছাত্র ও জনতা তাঁর উত্তরার বাসভবনে গিয়ে হামলা চালায়। তাঁকে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় নিচে নামিয়ে গলায় জুতার মালা পরানো হয় এবং ডিম ছুঁড়ে মারা হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনাস্থলে পুলিশের পোশাকধারী সদস্যদের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও তারা তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শেখ ফরিদ হোসেন বলেন, “আমি তখন গুলশানে ছিলাম। ফোনে জানতে পারি কিছু উত্তেজিত লোকজন নুরুল হুদাকে হেনস্তা করছে। আমি সবাইকে বলি আইন হাতে না নিতে এবং পুলিশের হাতে তাকে তুলে দিতে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি মুজাম্মেল হক ঢালীকে চিনি। তাকে জিজ্ঞেস করলে সে দাবি করেছে ভিডিওটি এডিট করা এবং তাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করেছি।”
এদিকে পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, “এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, তবে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ ধরে তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।”
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “দলের কেউ জড়িত থাকলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই ঘটনায় সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।