এক সময় খুব বদমাইশ হয়ে দেখেছি_
লোকজন ভয়ে সামনে সালাম দেয়,
আবার পিছন থেকে গালিও দেয়।
ধোয়া তুলসী পাতা হয়ে দেখেছি_
শীলপাটায় পিষে শুধুই রস টুকু নেয়,
প্রয়োজন শেষে ছুড়ে ফেলে দেয়।
গরীব হয়ে দেখেছি অন্যায় অত্যাচার জুলুম
কেননা গরীবের টাকাহীন জীবন
কাগজের ঠোঙ্গার মতন। এ কারণে
ধনী-গরীবের বৈষম্য বাড়ে প্রতিদিন,
আশা-আকাঙ্ক্ষার ভিড়ে মূল্যবোধ হয় ক্ষীণ।
খারাপের ভিড়ে জ্ঞানী-গুণী নিশ্চুপ
এই দুনিয়ার মানুষ_
ভালো মানুষের কদর বোঝেনা
তাইতো আজকাল মূর্খরা করে সমাজ শাসন,
ক্ষমতার পাওয়ার যে, কে কাকে করবে বারণ।
আজকাল যে সমাজের হালচাল
সুন্দর এক সমাজের অপেক্ষায়, আর কতকাল!
বিশ্লেষণ ও সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া:
বিপুল চন্দ্র রায়ের কবিতা “সমাজের হালচাল” একটি তীব্র বাস্তবচিত্র তুলে ধরেছে আমাদের চারপাশের সমাজ ব্যবস্থার। কবিতাটি সমাজের নৈতিক অবক্ষয়, ধনী-গরীব বৈষম্য, মূল্যবোধের ক্ষয় ও মূর্খের শাসনের প্রতি একটি তীক্ষ্ণ প্রতিবাদ।
মূল বার্তা ও থিম:
সমাজে ভণ্ডামি ও মুখোশধারী মানুষের ছড়াছড়ি।
গরীব মানুষের দুঃখ-কষ্ট, অবহেলা ও শোষণের চিত্র।
ক্ষমতাবানদের প্রভাব ও সাধারণ মানুষের মূল্যহীনতা।
জ্ঞানী-গুণীদের নীরবতা এবং মূর্খদের দাপট।
এক সুন্দর, ন্যায়ের সমাজের প্রত্যাশা।
শৈলীর দিক:
কবিতায় সরল ভাষা ব্যবহার হলেও এর ভাবগভীরতা যথেষ্ট শক্তিশালী।
উপমা ও রূপকের ব্যবহার (যেমন “কাগজের ঠোঙ্গা”, “শীলপাটায় পিষে”) কবিতাটিকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে।
প্রশ্নবোধক ও বিয়োগান্ত সুর কবিতায় সামাজিক সচেতনতা ও বেদনাবোধ উভয়ই প্রকাশ করেছে।
শেষ পংক্তির আবেদন:
“সুন্দর এক সমাজের অপেক্ষায়, আর কতকাল!”
এই পংক্তিটি কেবল হতাশা নয়, একটি তীব্র আর্তি—যা আমাদের সবাইকে নাড়া দেয়।
সারসংক্ষেপে:
এই কবিতা সমাজের চিত্রকে অমোঘ সত্যের ভাষ্যে তুলে ধরেছে—যেখানে মূল্যবোধ ক্ষীণ, আর মূর্খরা সমাজ শাসন করে। এটি একাধারে একটি প্রতিফলন এবং একটি প্রতিবাদ।
আপনি চাইলে আমি এই কবিতাটির ছন্দমিল সংস্করণ, চিত্রায়ন বা অন্য কোনো ব্যাখ্যামূলক রচনাও তৈরি করে দিতে পারি।