• আজ- সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন

সঙ্কটে নিরাপত্তার আশ্রয়স্থল সেনানিবাস

লেখক : / ৭৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

add 1

গত বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতায় বিপর্যস্ত সময়টিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল এক মানবিক পদক্ষেপ নিয়েছিল সেনাবাহিনী। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলাজনিত সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ৬২৬ জন নাগরিককে সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়—যার মধ্যে ছিলেন রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিচারক, পুলিশ সদস্য, সাধারণ নাগরিক ও তাঁদের পরিবার। সম্প্রতি সেনাবাহিনী এই বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে।

এই আশ্রয়দান ছিল নিঃসন্দেহে একটি সাহসী ও মানবিক পদক্ষেপ। রাজনৈতিক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, চুরি-ডাকাতি ও জীবননাশের আশঙ্কায় যখন মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল, তখন সেনানিবাস হয়ে উঠেছিল আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অস্থায়ী নিরাপদ আবাস। মানবিকতা ও জাতীয় দায়বদ্ধতার নিদর্শনস্বরূপ সেনাবাহিনী জীবন বাঁচানোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে—যা প্রশংসার দাবিদার।

এ প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সেনাবাহিনী তাদের বিবৃতিতে স্পষ্ট করে দিয়েছে—এই আশ্রয় ছিল অস্থায়ী এবং অধিকাংশ ব্যক্তি ১-২ দিনের মধ্যে স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছেন। মাত্র ৫ জনকে আইনি প্রক্রিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই স্বচ্ছতা ও নিয়ম মেনে চলার দৃষ্টান্ত জনমানসে আস্থা ফিরিয়ে আনে।

তবে উদ্বেগজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, একটি মহল বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে এই মানবিক পদক্ষেপকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছে। এটি কেবল সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা নয়, বরং সংকটকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানো একটি প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক কৌশলের শিকার বানানোর অপচেষ্টা। জনগণকে এ ধরনের অপপ্রচারের ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরি।

সেনাবাহিনীর এই ভূমিকা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, জাতীয় সংকটে তারা কেবল শৃঙ্খলার রক্ষক নয়, বরং মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া একটি সহায়ক শক্তিও। অতীতেও আমরা তা দেখেছি, ভবিষ্যতেও এ প্রত্যাশা থাকবে। সুশাসন ও আইনের শাসনের প্রতি সেনাবাহিনীর আনুগত্য, এবং সংকটে নাগরিক সুরক্ষা নিশ্চিতে তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা—দেশপ্রেমিক মনোভাবের প্রতিফলন।

আমরা আশা করি, সেনাবাহিনী এ ধরনের মানবিক ভূমিকা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে এবং রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে সবসময় জাতির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ