বর্তমান বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক। অপরাধের প্রবণতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি সমাজের সর্বস্তরে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। নিরীহ মানুষকে হত্যা, অত্যাচার এবং বেআইনি কাজের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এমনকি শিক্ষার্থীরাও এখন আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে, যা জাতির ভবিষ্যৎ যুবসমাজের জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রত্যাশা ছিল, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মতো প্রজ্ঞাবান নেতৃত্ব দেশের পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। দেশের মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অপরাধের পথে হাঁটছে, এবং সরকারের দায়িত্বশীল মহল নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
সম্প্রতি উৎসব মণ্ডল ও তোফাজ্জল হত্যার ঘটনা এবং জ্ঞানেন্দ্র বালা নামক এক নিরীহ ব্যক্তির নৃশংস হত্যাকাণ্ড আমাদের এই বিপর্যস্ত সমাজের প্রতিচ্ছবি। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পেতে হিমশিম খাচ্ছে। জ্ঞানেন্দ্র বালার হত্যার মতো ঘটনাগুলো আইন-শৃঙ্খলার করুণ অবস্থারই বহিঃপ্রকাশ। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে জীবনের বিনিময়ে তার হিসাব মেটাতে হলো। এমন নিষ্ঠুরতা আমাদের মূল্যবোধ ও নৈতিকতার অধঃপতনের স্পষ্ট উদাহরণ।
প্রশ্ন উঠছে—এই সরকার কি আদৌ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে? নাকি ক্ষমতা এমন লোকদের হাতে হস্তান্তর করবে, যাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা এবং দেশ পরিচালনার যথার্থ দক্ষতা রয়েছে? দেশের জনগণ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ জীবন কামনা করে, তারা পোলাও-মাংসের প্রত্যাশা করে না। জনগণের এই সরল চাহিদা পূরণে যদি সরকার ব্যর্থ হয়, তবে তাদের জনপ্রিয়তা নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়।
এখনো সময় আছে। সরকারকে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে এবং মানুষকে জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। অন্যথায়, এই অব্যবস্থাপনা জাতির ভবিষ্যৎকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। যুবশক্তি, যারা দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা হওয়ার কথা, তারা ধ্বংসের পথে পা বাড়াবে।
এই সংকটময় সময়ে সরকার ও নীতি-নির্ধারকদের প্রতি আমাদের অনুরোধ—বিচার, শৃঙ্খলা এবং মানবিকতার দিকনির্দেশনা মেনে সঠিক পথে ফিরুন। অন্যথায়, প্রকৃতির নিয়মেই এর কঠিন মূল্য দিতে হবে।