ভারতের মাদরাসাগুলোর অর্থের উৎস খতিয়ে দেখতে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের অভিযোগের পর এই সিদ্ধান্ত হয়। ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (এনসিপিসিআর) সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছে, মাদরাসায় ইসলামের আধিপত্যের শিক্ষা দেওয়া হয় এবং যুগোপযোগী বিষয় শেখানো হয় না। তাই মাদরাসার শিক্ষাব্যবস্থা ভারতের শিক্ষার অধিকার আইনের আওতায় পড়ে না। এলাহাবাদ হাইকোর্টের ২২ মার্চের একটি নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা পড়ে। এনসিপিসিআর তাদের মতামত গত ১১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে।
ইতিমধ্যে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ‘উত্তরপ্রদেশ বোর্ড অফ মাদরাসা শিক্ষা আইন, ২০০৪’ অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। হাইকোর্টের মতে, মাদরাসা শিক্ষার অধিকার আইন ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘন করেছে, যা সংবিধানের ১৪তম অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকার। বিচারপতি বিবেক চৌধুরী ও সুভাষ বিদ্যার্থীর বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে স্বীকৃত প্রাইমারি, হাইস্কুল এবং ইন্টারমিডিয়েট স্কুলে ভর্তি করতে হবে।
উত্তরপ্রদেশ সরকার আদালতকে জানিয়েছে, মাদরাসা বোর্ড শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় শিক্ষা দিলেও এটি সংবিধান সম্মত। এরপর সুপ্রিম কোর্ট এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। সেই মামলাতেই এনসিপিসিআর তাদের মতামত জানিয়েছে।
২০১৮-১৯ সাল পর্যন্ত ভারতে ২৪,০১০টি মাদরাসা ছিল। যার মধ্যে ১৯,১৩২টি স্বীকৃত এবং ৪,৮৭৮টি অস্বীকৃত মাদরাসা। ভারতের ৬০ শতাংশ মাদরাসা উত্তরপ্রদেশে ছিল, যেখানে ১১,৬২১টি স্বীকৃত এবং ২,৯০৭টি অস্বীকৃত মাদরাসা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাজ্য ছিল রাজস্থান।
মাদরাসায় শিক্ষার্থীরা মৌলভি (দশম শ্রেণি), আলিম (দ্বাদশ শ্রেণি), কামিল (স্নাতক) এবং ফাজিল (মাস্টার্স) কোর্সে পড়াশোনা করে।
মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা: মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিক পূর্ব ও উত্তর ইরান, মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, খোরাসান এবং বাংলাদেশে চালু আছে।
ভারতে দুটি শ্রেণির মাদরাসা আছে: ১. মাদরাসা দারসে নিজামি, যেগুলো দাতব্য সংস্থা হিসেবে পরিচালিত হয় এবং রাজ্যের স্কুলশিক্ষা পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে না। ২. মাদরাসা দারসে আলিয়া, যেগুলো রাজ্যের মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত এবং নিয়ন্ত্রিত হয়।