বিএনপি সম্প্রতি দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। দলটি থেকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং বিভিন্ন অসঙ্গতির অভিযোগে সারা দেশে পাঁচশোরও বেশি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও তাদের পদ স্থগিত করা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করার ঘটনাটি দলে শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে সামনে এসেছে। সাইফুল আলম নিরবের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগে তার কমিটি ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি নেতিবাচক সংবাদ হলেও, এটি দলীয় শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনের প্রয়াসকেই ইঙ্গিত দেয়।
বিএনপি’র এই পদক্ষেপগুলোর মূল উদ্দেশ্য দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা। চাঁদাবাজি ও দখলবাজির মতো দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক সংগঠনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নেতারা যখন নিজেদের স্বার্থে এই ধরনের কাজে লিপ্ত হন, তখন দলের ইমেজ ও সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর থেকে এই ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা প্রয়োজনীয় হলেও, এটিকে শুধু নেতাদের বহিষ্কার বা পদ স্থগিত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়। বিএনপি’র উচিত হবে এই সমস্যা সমাধানের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা। বিশেষ করে দলের ভেতরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন।
শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের জন্য কিছু সুপারিশ
প্রথমত, দলে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলা দরকার, যারা জনগণের স্বার্থে এবং দলের নীতির প্রতি নিষ্ঠাবান থাকবেন। দ্বিতীয়ত, নেতৃত্ব নির্বাচনে সততার মানদণ্ড বজায় রাখা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের অভিযোগ না উঠে। তৃতীয়ত, দলের কর্মীদের মাঝে নৈতিকতার শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে, যাতে তারা দলের আদর্শের প্রতি আস্থাশীল থাকে।
বিএনপি যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের মধ্যে তাদের হারানো আস্থা পুনরুদ্ধার করতে চায়, তবে এই শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে আরো সুসংহত ও কার্যকরভাবে চালিয়ে যেতে হবে।