আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় স্টেটগুলো, যেমন ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নর্থ ও সাউথ ক্যারলিনা এবং ভার্জিনিয়া, স্মরণকালের ভয়াবহ হারিকেন হেলেনের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে। এর মধ্যে ২৫ জন সাউথ ক্যারলিনার, ১৯ জন জর্জিয়ার, এবং ১১ জন ফ্লোরিডার বাসিন্দা।
শক্তিশালী এই ঝড়ে লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে এবং অসংখ্য মানুষ গৃহহারা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্লোরিডা ও জর্জিয়া। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বাংলাদেশি আমেরিকানরাও রয়েছেন, তবে শনিবার রাতের তথ্যানুযায়ী, নিহতদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি নেই।
বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা, হেলিকপ্টার, এবং বড় যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে। বীমা কোম্পানিগুলো ধারণা করছে, এই ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক শত বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
উল্লেখ্য, হারিকেন হেলেন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফ্লোরিডার টেম্পাসহ উপকূলীয় এলাকায় ক্যাটাগরি ৪ ঝড় হিসেবে আঘাত হানে, যার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল। ফ্লোরিডা থেকে শুরু হয়ে ঝড়টি দ্রুত জর্জিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার সন্ধ্যায় জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প বলেন, “বোমা হামলার মতো ভয়ংকর পরিস্থিতি মুহূর্তেই জর্জিয়ার বাসিন্দাদের গ্রাস করল। বাড়িঘর ছিন্নভিন্ন হয়ে আকাশে ভাসতে দেখা গেছে।” এরপর হেলেনের গতিপথ দক্ষিণ ও উত্তর ক্যারলিনা এবং টেনেসির দিকে অগ্রসর হয়।
ঝড়ো হাওয়ার সাথে ১৫-১৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিস গুড়িয়ে দিয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞের ফলে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া মানুষও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। ১৬ ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবে বিস্তীর্ণ এলাকা বিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
নর্থ ক্যারলিনার গভর্নর কোপার বলেন, “উদ্ধার কাজে নিয়োজিতরা হতভম্ব হয়ে গেছে, কীভাবে সবকিছু ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে তা তারা বিশ্বাস করতে পারছে না।” এই জলোচ্ছ্বাস আমেরিকানদের মধ্যে গভীর শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।