• আজ- রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১১ অপরাহ্ন

শ্রমিক বিক্ষোভে আশুলিয়ায় পোশাক শিল্পে অস্থিরতা

লেখক : / ৩৫ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

add 1

সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ আবারও আমাদের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার দুরবস্থা এবং শিল্প খাতের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সামনে নিয়ে এসেছে। প্রায় ১৯টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ এবং শ্রমিক অসন্তোষ একটি গুরুতর সংকেত বহন করছে—শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত না হলে দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এই শ্রমিক বিক্ষোভের মূল কারণ বকেয়া বেতন, যা শুধু শ্রমিকদের ব্যক্তিগত জীবনে চাপ সৃষ্টি করছে না, বরং পুরো শিল্পখাতকেই অস্থিতিশীল করে তুলছে। যখন শ্রমিকরা সময়মতো বেতন পান না, তখন তাদের পরিবারের খরচ চালানো, বাসা ভাড়া পরিশোধ করা এবং দৈনন্দিন চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে পড়ে। এই আর্থিক সংকট শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলোর পক্ষে দাঁড় করায়, এবং এ ধরনের সংকট যদি দ্রুত সমাধান না করা হয়, তবে তা আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে।

কারখানা মালিকরা শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, তারা নিয়মিত কাজ চালিয়ে গেলেও বেতন পরিশোধ ছাড়াই কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু শ্রমিকদের আর্থিক কষ্ট বাড়াবে না, বরং শিল্পখাতের উৎপাদনশীলতা ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের সুনামকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে—শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে এই বিশাল বিভেদ কেন? আমাদের নীতিনির্ধারকদের উচিত, শ্রমিকদের অধিকার এবং মালিকদের স্বার্থের মধ্যে একটি সুষম সম্পর্ক স্থাপন করা। মালিকরা যখন শ্রমিকদের বেতন দিতে ব্যর্থ হয়, তখন তা শুধু শ্রমিকদের জীবনে নয়, পুরো অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ অবস্থায় উভয় পক্ষের সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।

এখানে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিকদের বেতন ও কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শ্রম অসন্তোষ কমানো যেতে পারে। একইসঙ্গে, মালিকদেরও উচিত শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া এবং শ্রম আইন মেনে চলা।

অন্যদিকে, সরকারের কাছে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা উচিত, যাতে শিল্প খাতের এই ধরনের সংকটগুলো নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ ও সমাধান করা যায়। শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্ব এবং শিল্পখাতে অস্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্ববাজারে তার অবস্থান হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রেতারা যদি বাংলাদেশকে অনির্ভরযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করতে শুরু করে, তবে সেটি আমাদের অর্থনীতির জন্য এক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

অতএব, এই সংকটের দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষা ও মালিকদের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমঝোতার মাধ্যমে একটি কার্যকরী সমাধানই এই অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে পারে।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ

আজকের দিন-তারিখ

  • রবিবার (বিকাল ৫:১১)
  • ৬ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২ রবিউস সানি, ১৪৪৬
  • ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ (শরৎকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT