• আজ- রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫২ অপরাহ্ন

ধূমপান মানসিক চাপ বাড়ায়, প্রশান্তি নয়

লেখক : / ৭২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

add 1

ধূমপান একটি অভ্যাস যা সমাজের বিভিন্ন স্তরে গভীরভাবে প্রোথিত। ধূমপায়ীরা প্রায়ই দাবি করেন, তারা স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমানোর জন্য সিগারেটের আশ্রয় নেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন, একটি সিগারেট মানসিক প্রশান্তি এনে দেয় এবং কাজের দক্ষতা বাড়ায়। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিজ্ঞানের আলোকে স্পষ্ট হয়েছে যে, ধূমপান আসলে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপান মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। স্কিৎজোফেনিয়া, অ্যাটেনশান ডেফিশিয়েট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার (এইএইচডি), বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং ডিপ্রেশনসহ বেশ কয়েকটি মানসিক রোগের সঙ্গে ধূমপানের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যারা নিয়মিত ধূমপান করেন, তাদের এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ধূমপান না করা ব্যক্তিদের তুলনায় অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, ধূমপায়ীদের স্কিৎজোফেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্তত পাঁচগুণ বেশি। একইভাবে, এডিএইচডি বা অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রেও ধূমপায়ীদের মধ্যে এসব রোগের প্রবণতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।

তবে, ধূমপায়ীরা যে সিগারেটকে স্ট্রেস রিলিফ হিসেবে ব্যবহার করেন, তা আসলে একটি মিথ। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, সিগারেটের কারণে শরীর সাময়িকভাবে ডোপামিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা কিছুক্ষণের জন্য প্রশান্তি এনে দেয়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি মানসিক চাপ ও শারীরিক ক্ষতি বাড়ায়। ধূমপান ত্যাগ করার পর তিন মাসের মধ্যেই ডোপামিন নিয়ন্ত্রণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ফিরে আসে এবং মানসিক চাপ কমে। অর্থাৎ, সিগারেট স্বস্তির প্রতিশ্রুতি দিলেও এটি কেবল শরীরে ও মনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।

ধূমপান ছাড়ার ফলে মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে নতুন উদ্যম ফিরে পায়। সিগারেটের বিকল্প হিসেবে মুক্ত বাতাসে হাঁটা বা শারীরিক কার্যকলাপ করলে মস্তিষ্কের রিফ্রেশমেন্ট স্বাভাবিকভাবে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপান না করেও মানসিক স্বস্তি ও সতেজতা লাভ করা সম্ভব, যা দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাকে নিশ্চিত করে।

অতএব, আমাদের বুঝতে হবে, ধূমপান থেকে স্ট্রেস রিলিফ পাওয়া কেবল একটি মিথ। বাস্তবিকভাবে, এটি স্ট্রেস আরও বাড়িয়ে তোলে এবং মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং এই অভ্যাস থেকে মুক্তির পথ খোঁজা আমাদের সবার জন্য জরুরি।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Sundarban IT