বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে নতুন এক যুগে প্রবেশ করছে। মেটার মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্মটি প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যোগ করে তার গ্রাহকদের জন্য সেবা উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপ ‘থার্ড পার্টি চ্যাটস’ নামে একটি নতুন বিভাগ যোগ করতে যাচ্ছে, যা মেসেজিং সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
নতুন ফিচারটি হোয়াটসঅ্যাপকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ ফিচারের মাধ্যমে, হোয়াটসঅ্যাপ থেকে সরাসরি অন্যান্য জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ যেমন সিগন্যাল, টেলিগ্রাম, গুগল মেসেজ এবং ইমেসেজের সাথে সংযোগ স্থাপন করা যাবে। অর্থাৎ, ব্যবহারকারীরা এক প্ল্যাটফর্ম থেকেই বিভিন্ন অ্যাপের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান করতে পারবেন। এটি ব্যবহারকারীদের জন্য যেমন সময় সাশ্রয় করবে, তেমনই সহজে যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
নতুন এই ফিচারটি শুধু ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক নয়, বরং গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। মেটা জানিয়েছে, ব্যবহারকারীরা থার্ড পার্টি অ্যাপ থেকে বার্তা পেলে একটি নোটিফিকেশন পাবেন এবং সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন মেসেজ গ্রহণ করবেন নাকি বাতিল করবেন। তাছাড়া, ব্যবহারকারীরা চাইলে অন্যান্য অ্যাপের চ্যাট আলাদা ফোল্ডারে সংরক্ষণ করার সুযোগ পাবেন, যা ব্যক্তিগত চ্যাট ম্যানেজমেন্টকে আরও সহজ করবে।
নতুন ফিচারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো ‘রিচ মেসেজিং’ সুবিধা। এটি টাইপিং ইন্ডিকেটর, রিড রিসিপ্ট, ডিরেক্ট রিপ্লাই এবং মেসেজে রিঅ্যাকশন দেওয়ার মতো ফিচারগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করবে। এতে ব্যবহারকারীরা অন্যান্য অ্যাপের ব্যবহারকারীদের সাথে আরও দ্রুত ও সহজে যোগাযোগ করতে পারবেন।
এছাড়া, ২০২৭ সাল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা থার্ড পার্টি অ্যাপের মাধ্যমে কল করার সুবিধাও পাবেন, যা যোগাযোগের আরও একটি নতুন সুযোগ তৈরি করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল মার্কেট অ্যাক্টের প্রভাবের কারণে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে, যা বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করেছে তাদের অ্যাপের মধ্যে সংযোগের সুযোগ দিতে।
হোয়াটসঅ্যাপের এই নতুন উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, এটি ব্যবহারকারীর চাহিদার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতির একটি প্রমাণ। ব্যবহারকারীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে হোয়াটসঅ্যাপ তাদের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা এবং ব্যবহারিক সুবিধাকে আরও উন্নত করার মাধ্যমে একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের সূচনা করছে। এতে প্রতিযোগিতার বাজারে তারা টিকে থাকার পাশাপাশি নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে। এখন সময় এসেছে দেখার, এই প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন জীবনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এক বিষয় নিশ্চিত, হোয়াটসঅ্যাপের এই পরিবর্তন ডিজিটাল যোগাযোগের জগতে এক নতুন যুগের সূচনা করছে।