সাতক্ষীরায় খাসজমি দখলমুক্তকরণে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ একটি প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। ভূমিদস্যুদের কবল থেকে সরকারি সম্পদ রক্ষা করা যেমন প্রশাসনের দায়িত্ব, তেমনি এটি দেশের আইনের শাসন ও জনগণের স্বার্থ রক্ষার দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত টাস্কফোর্স সভা এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় সদর উপজেলার আলিপুর এলাকায় প্রায় ৩০ বিঘা খাসজমি উদ্ধারের ঘটনা তা-ই প্রমাণ করে।
দেশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি ও চক্র সরকারি খাসজমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। এই জমিগুলোতে গড়ে উঠেছে ব্যক্তিমালিকানাধীন স্থাপনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি জলমহল পর্যন্ত। সাতক্ষীরার আলিপুরেও ঠিক এমনই অবস্থা দেখা গেছে, যেখানে দখলদাররা সরকারি জমিতে গড়ে তুলেছিল ট্রাক টার্মিনালসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। এ ধরনের দখল শুধু আইন লঙ্ঘনই নয়, এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদের উপর চরম অন্যায় হস্তক্ষেপ।
জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় যে দৃঢ় ও সুপরিকল্পিতভাবে জমি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়। এ ধরনের উদ্যোগ অন্যান্য জেলা প্রশাসনের জন্যও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
তবে শুধু অভিযান পরিচালনা করলেই চলবে না। এসব জমি উদ্ধার করার পর সেগুলোর যথাযথ সংরক্ষণ, পুনঃব্যবহার এবং জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। নইলে কিছুদিন পর আবারও নতুন দখলদাররা এগুলো কব্জা করে নেবে।
এছাড়া প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ, শক্তিশালী ও নিরপেক্ষভাবে ভূমিদস্যুদের তালিকা প্রণয়ন এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় জনগণকেও এ বিষয়ে সচেতন ও সহায়তাকারীর ভূমিকা রাখতে হবে। ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিবাদ গড়ে তোলার মাধ্যমেও এই অন্যায় রোধ করা সম্ভব। সাতক্ষীরার ভূমি উদ্ধার অভিযানে প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে আমরা আশাবাদী, সারাদেশেই এমন সাহসী ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষিত হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।