বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্য সূচকের সাম্প্রতিক পতন কিছুটা আশার আলো দেখালেও শস্য উৎপাদনে বিপদের ঘণ্টা বাজাচ্ছে। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্টে খাদ্য মূল্য সূচক কমে ১২০.৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা গত জুলাইতে ছিল ১২১ পয়েন্ট। যদিও ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর খাদ্যের মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল, কিন্তু ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তা তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় নামে।
এক বছরের তুলনায় খাদ্য মূল্য সূচক ১.১ শতাংশ কমেছে, যা ২০২২ সালের মার্চের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে ২৪.৭ শতাংশ কম। তবে এই সূচকের পতন সত্ত্বেও শস্য উৎপাদনে সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে এফএও। ২০২৪ সালে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস ২.৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন কমিয়ে ২.৮৫১ বিলিয়ন টনে নামানো হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো ও ইউক্রেনে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে শস্য উৎপাদন হ্রাসের সম্ভাবনা বাড়ছে।
এফএওর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক শস্য মজুদ ৮৯০ মিলিয়ন টনে নেমে আসবে, যা বর্তমানের তুলনায় আরও সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। খাদ্য মূল্য সূচকের পতন সত্ত্বেও ভবিষ্যতে শস্য উৎপাদনে শুষ্ক আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এফএওর তথ্য আমাদের জন্য সতর্কবার্তা—শুধু মূল্য সূচক নয়, বরং শস্য উৎপাদন এবং মজুদের ওপর নজরদারি বাড়ানো এখন জরুরি।
বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। খাদ্য মূল্য কমলেও, শস্যের উৎপাদন সংকটে পড়ে গেলে তা বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, যা মোকাবিলায় এখনই প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।