ঈদুল আজহায় ঘরে আসে প্রচুর কোরবানির মাংস। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে মাংস সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা জরুরি। অনেকে দীর্ঘদিন ফ্রিজে মাংস রাখেন, তবে নিয়ম না মেনে সংরক্ষণ করলে মাংসে জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া ও পচনের ঝুঁকি বাড়ে। নিচে মাংস সংরক্ষণের কিছু কার্যকর পদ্ধতি দেওয়া হলো:
✅ ফ্রিজে সংরক্ষণ পদ্ধতি
১. ফ্রিজ পরিষ্কার করুন এবং তাপমাত্রা সঠিক (মাইনাস ১৮ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) কিনা তা নিশ্চিত করুন।
২. কাঁচা ও রান্না করা মাংস আলাদা রাখুন। একইভাবে মাছ ও মাংস একসঙ্গে ফ্রিজে রাখবেন না।
৩. মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে ৩-৪ ঘণ্টা রাখুন, তারপর ছোট ছোট প্যাকেটে ভরে ফ্রিজ করুন।
4. প্যাকেট থেকে বাতাস বের করে জিপলক ব্যাগ বা ফয়েল পেপারে মুড়ে রাখুন।
5. খবরের কাগজ ব্যবহার করবেন না—কালির বিষাক্ত উপাদান মাংসের ক্ষতি করতে পারে।
6. প্যাকেটে তারিখ ও অংশের নাম লিখে রাখুন—পরিচয় ও মেয়াদ বোঝা সহজ হবে।
7. ১-৩ মাসের মধ্যে মাংস ব্যবহার করুন, কারণ সময়ের সঙ্গে পুষ্টিগুণ কমে যায়।
8. ফ্রিজ বারবার খুলবেন না এবং প্রয়োজনে আইস বক্স ব্যবহার করুন।
9. প্রসেস করা কাঁচা মাংস ১-২ দিন চিল্ড কম্পার্টমেন্টে (১-৩ ডিগ্রি) রাখা যাবে।
10. মাংসের ধরনভেদে সংরক্ষণকাল:
-
গরু: ৮–১০ মাস
-
খাসি: ৫–৬ মাস
-
মহিষ/উট: ৬ মাস
-
ভেড়া: ২–৩ মাস
-
কলিজা, মগজ: ১–২ সপ্তাহের মধ্যে খাওয়া উচিত
✅ জ্বাল দিয়ে সংরক্ষণ
১. চর্বিযুক্ত মাংস লবণ ও হলুদ দিয়ে বড় হাঁড়িতে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে জ্বাল দিন।
২. ভালোভাবে ঠান্ডা করে ঢেকে রাখুন—গরমকালে ১২ ঘণ্টা, শীতকালে ২৪ ঘণ্টা সংরক্ষণযোগ্য।
৩. লবণ, লেবুর রস বা ভিনেগারে ডুবিয়ে জ্বাল দিলে ৫–৬ দিন ভালো থাকে।
৪. প্রতিদিন জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করুন—নষ্ট হওয়া রোধে কার্যকর।
✅ রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ
১. চর্বিমুক্ত মাংস পাতলা করে কেটে তারে গেঁথে রোদে দিন।
২. নেট বা পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন—ধুলোবালি ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে।
৩. সম্পূর্ণ শুকিয়ে মুখবন্ধ পাত্রে রাখুন, মাঝে মাঝে রোদে দিন।
4. রান্নার আগে ১ ঘণ্টা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখলে মাংস নরম হবে।
সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত মাংস দীর্ঘদিন সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর থাকে।