• আজ- সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন

অযত্ন-অবহেলায় নিশ্চিহ্নের পথে ঐতিহাসিক তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি

লেখক : / ১২৭ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫
তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি
তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি

add 1

পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের তাঁতীবন্দ গ্রামে অবস্থিত শতবর্ষী ঐতিহাসিক তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি আজ প্রায় ধ্বংসপ্রায়। সংস্কারের অভাবে ভবনের চারপাশে লতাপাতায় ঘেরা এই জমিদার বাড়িটি হারাতে বসেছে তার অস্তিত্ব।

স্থানীয়ভাবে ‘গোবিন্দ চৌধুরীর জমিদার বাড়ি’ নামে পরিচিত এই স্থাপনাটি ১৭০০ শতকের মাঝামাঝিতে জমিদার উপেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর উদ্যোগে নির্মিত হয়। ইট, সুরকি ও রড দিয়ে নির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন ভবনের রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস ও স্থাপত্যশৈলী। পরবর্তীতে জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর শাসনামলে জমিদারির ব্যাপক প্রসার ঘটে এবং তার নামেই বাড়িটি বেশি পরিচিত হয়ে ওঠে।

জানা যায়, বিজয় গোবিন্দ ছিলেন একজন কঠোর শাসক হলেও প্রজাবান্ধব। সামর্থ্যবান প্রজাদের কাছ থেকে তিনি নিয়মিত খাজনা আদায় করলেও দরিদ্রদের প্রতি ছিলেন সহানুভূতিশীল। তবে তার শাসনামলে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নানা ধর্মীয় বিধিনিষেধ আরোপিত ছিল। কোরবানি ও অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনেও ছিল কড়াকড়ি।

বিজয় গোবিন্দ তার বিলাসবহুল জীবনযাপনের অংশ হিসেবে হাতিবহর ব্যবহার করতেন এবং এ বাবদ প্রজাদের কাছ থেকে আলাদা করে খাজনা আদায় করতেন। তবে তার মুসলিম সমসাময়িক আজিম চৌধুরীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, যা তখনকার সময়ে বিরল বলে মনে করা হয়।

বর্তমানে জমিদার বাড়ির আশপাশের দুটি মঠ—যা জমিদার বংশেরই স্থাপনা—পর্যটকদের মধ্যে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন এই ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, বাড়িটির মূল ভবন এখন অযত্ন ও অবহেলায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

সুজানগর উপজেলার সচেতন মহল ও তাঁতীবন্দ গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের প্রত্যাশা, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে বাড়িটিকে একটি দর্শনীয় স্থান এবং পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হোক। এতে ইতিহাস রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি তাঁতীবন্দ গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

add 1


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য লেখা সমূহ